No products in the cart.
গাওয়া ঘি নিয়ে যত কথা
গাওয়া ঘি-এর উপকারিতাঃ
প্রাচীনকাল থেকে সুস্বাদু ঘি বাঙালির খাদ্য তালিকার একটি প্রধান অংশ হয়ে আছে। আর ঘি বলতে আমরা বুঝি গাওয়া ঘি বা গরুর দুধ থেকে তৈরি ঘি। এটি দুধের ননী থেকে তৈরি ।
গাওয়া ঘি রয়েছে অনেক উপকারিতা ও পুষ্টিগুন। গাওয়া ঘিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বাটাইরিক অ্যাসিড যা পরিপাকতন্ত্রের প্রধান কাজ হজমে সহয়তা করে। যারা বিশেষ করে কোষ্ঠকাঠিন্যতে ভুগছেন তাদের জন্য গাওয়া ঘি অত্যন্ত উপকার। কোলেস্টেরল কমাতে দূর্দান্ত কাজ করে এই ঘি। ওজন কমাতেও সাহায্য করে ঘি। তাছাড়া কিছু হেলদি ফ্যাট এবং চেইন ফ্যাটি এসিড রয়েছে গাওয়া ঘি তে যা ওজন বাড়তে না দিয়ে উল্টোও খারাপ কোলেস্টেরল গুলোকে বার্ন করে দেয়।
গাওয়া ঘি এর আরেকটি উপকারী দিক হলো, এতে থাকা ভিটামিন এ,ডি এবং ই চোখ ও ত্বক ভালো রাখার সাথে সাথে গাটের ব্যাথা দূর করতে সাহায্য করে আর হাড় মজবুত করে। প্রাচীন আয়ূর্বেদিক মতে ঘি কে মানা হয় মস্তিষ্কের উন্নতির জন্য সুপারফুড। যা স্মতিশক্তির উন্নতি ঘটাতে দারুন কাজ করে।
গাওয়া ঘি তে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেটনস্ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ প্রদাহ দূর করে প্রাকৃতিক উপায়ে। হার্টের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সহ, ডায়াবেটিক, ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ বিশেষভাবে কাজ করে থাকে।
প্রাচীনকাল থেকে গাওয়া ঘি সহ অন্যান্য সকল ঘি কে মানা হয় বিগ পজেটিভ ফুড হিসেবে। এই সহজ পদটি আপনার খাবারকে সুস্বাদ করার পাশাপাশি শরীরকে দিবে সবরকম শক্তি।
ভেজালযুক্ত ঘি
একসময় গ্রাম বাংলার চিরায়ত রূপ ছিলো এমন যে, শীতের সকালে গরম ভাত আর খানিকটা ঘি একত্রে মিশিয়ে খাওয়া হতো। কিন্তু সেই দৃশ্য আজ সব খানেই বিরল। তখন তো আর ভেজাল ও ছিলো না। তাই মানুষ খেতো ও প্রচুর। এখন তো সেই খাঁটি ঘি পাওয়াই দুষ্কর। ভেজাল ঘি খেয়ে মানুষের শারীরিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়ার ফলে মানুষ এখন ঘি জাতীয় খাদ্য খাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে। এক সময় যেখানে প্রায় প্রত্যেক মুখরোচক খাবারে ঘি ব্যবহৃত হতো, সেখানে অনেক খাদ্যেই ঘি এর যায়গা দখল করেছে তেল জাতীয় অন্য খাবার।
ভিটামিনের উৎস: বিশেষজ্ঞের মতে, “প্রাকৃতিকভাবেই ঘিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, লাইনোলেইক অ্যাসিড ও বিউটাইরিক অ্যাসিড থাকে। দৃষ্টিশক্তি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, জননাঙ্গ ইত্যাদির জন্য ভিটামিন ‘এ’ অত্যন্ত উপকারী।
ঘিতে সামান্য পরিমাণ ভিটামিন ‘কে’, ‘ই’ এবং ‘বি টুয়েলভ’ থাকে।
ঘিয়ের ভিটামিন ‘এ’ এবং ‘কে’ চর্বিতে দ্রবণীয়। ফলে চর্বিজাতীয় খাবারের সঙ্গে খেলে শরীরে আরও ভালোভাবে শোষিত হয়। শরীরের প্রয়োজনে ব্যবহৃতও হয় বেশি কার্যকরভাবে।”
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান: কোষকে ‘অক্সিডেটিভ’ ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। অক্সিজেনের সঙ্গে পদার্থের রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে কোষের যে ক্ষয় হয় তাই হচ্ছে ‘অক্সিডেটিভ’ ক্ষতি। শরীরে চিনি বেশি হলে, বিপাকীয় চাপ বেশি হলে, কোষের মাইটোকন্ড্রিয়া ভালোভাবে কাজ না করলে এবং ইনসুলিনের অনিয়ম হলে এই সমস্যা হয়। অতিরিক্ত অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে ক্যান্সার ও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর এই সমস্যার ঝুঁকি কমাতে কিছুটা হলেও অবদান আছে ঘিয়ের।
হাড়ের গঠন: “ঘিয়ের ভিটামিন ‘কে’ ক্যালসিয়ামের সঙ্গে মিলে হাড়ের স্বাস্থ্য ও গঠন বজায় রাখে। স্বাস্থ্যকর ইনসুলিন ও শর্করার মাত্রা বজায় রাখতে কাজে লাগে ভিটামিন ‘কে।” বলেন চ্যাডউইক।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অর্গানিক ভ্যালির রেজিস্টার্ড পুষ্টিবিদ এবং ফুড স্লুথ রেডিও অর্গানিক’য়ের উপস্থাপিকা মেলিন্ডা হেমেলগার্ন পুষ্টিবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে জানান, “শতভাগ তৃণভোজী গাভীর দুধ থেকে তৈরি ঘি থেকে মেলে সিএলএ (কনজুগেইটেড লাইনোলেইক অ্যাসিড) নামক চর্বি এবং উচ্চমাত্রার ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের গুণাগুন।”
এসম্পর্কে ডা. চ্যাডউইক বলেন, “গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ ও পশু উভয়ের শরীরেই কনজুগেইটেড লাইনোলেইক অ্যাসিড ‘অ্যাডিপস’ অর্থাৎ ‘ফ্যাট টিস্যু’ কমায়, হাড়ের স্বাস্থ্যকর গঠন তৈরিতে সহায়তা করে, হজমে সাহায্য করে, কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। তাই খাদ্যাভ্যাসে এরমধ্যে মাখনের চাইতে ঘি যোগ করাই আদর্শ।”
গরু বা মহিষের দুধ জ্বাল দিয়ে দিয়ে তৈরি হয় ঘি। কিন্তু, এই ঘি খাটিত্ব নিয়েই একদিন উঠেছিল প্রশ্ন। পাশাপাশি এর খাদ্যগুণ সম্পর্কেও সন্দেহ তৈরি হয়েছিল আম জনতার মনে। কারণ, ঘি-তে যেভাবে ভেজাল মেশাতে শুরু করেছিল একদল অসাধু ব্যবসায়ী তাতে মাখনেই মনোনিবেশ করেছিল দেশের অধিকাংশ মানুষ।
কিন্তু, বর্তমান দিনের গবেষণা বলছে ঘি-তেই আছে আসল খাঁটি খাদ্যগুণ। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ঘি অনেকটাই এগিয়ে। ফলে, আম জনতা ফের ঝুঁকেছে ঘি-এর দিকে। এরস সঙ্গে যোগ হয়েছে বেশকিছু সংস্থা ঘি-কে বাজারজাত পণ্যে রূপান্তরিত করায়।
একটা সময় ঘি-নিয়ে অন্ধকারেই ছিল গোটা বিশ্ব। বিশেষ করে আমেরিকাতে ঘি আমদানিতে বহু কড়া বিধিনিষেধ ছিল। কারণ মার্কিনিদের মনে ধারনা ছিল ঘি-এর ভিতরে থাকা কিছু লুকনো ‘ফ্যাট’ ওবেসিটি, হাই কোলেস্টেরল, আর্লি ডেথ-এর মতো জিনিসগুলির কারণ। কিন্তু, দীর্ঘ গবেষণায় মার্কিন বিজ্ঞানীরাও জানিয়েছেন ঘি-র সবচেয়ে সুরক্ষিত খাদ্যদ্রব্য। এরপরই আমেরিকা সরকার ২০১৫ সালে ঘি- আমদানিতে বিধিনিষেধ শীথিল করে। বর্তমানে আমেরিকায় দেদার রফতানি হচ্ছে ঘি। সেখানে প্রবাসী সঙ্গে সঙ্গে আমেরিকানরাও কন্টেনার ভরা ঘি-এর অর্ডার দিচ্ছেন। আমেরিকার বহু ডিপার্টমেন্টাল স্টোরও এখন ঘি-কে তাদের সংগৃহীত ফুড আইটেমে স্থান দিয়েছে।
খাটি গাওয়া ঘি কিনতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
Leave a Reply